করনা মহামারিতে সহায়তা প্রদান
এরিক জু বলেন, ‘ভয়াবহ এই করোনা বিপর্যয় আমাদের আবার মনে করি দিলো যে আমরা একই দুনিয়ায় বাস করি এবং আমাদের পরিণতিও এক। এই ধরনের বিপর্যয় মোকাবিলায় আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকা দরকার। কারণ ভাইরাস কোনো সীমানা মানে না। জাতি-বর্ণ, ধনী-গরীব নির্বিশেষে এটি যেকোনো সময় যে কাউকেই নিজের লক্ষ্যবস্তু বলে বেছে নিতে পারে।’
হুয়াওয়ে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে তাদের নিট মুনাফার হার প্রায় ৭.৩%। করোনায় নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও গত তিন মাসে প্রায় ২৫ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছে হুয়াওয়ে, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ১.৪% বেশি। বর্তমান পরিস্থিতিতে বড় ঝুঁকিগুলো চিহ্নিত করে উৎপাদন কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে কাজ করছে কোম্পানিটি। বিপর্যস্ত এই সময়ের মধ্যেও হুয়াওয়ের ব্যবসা আগের মতোই চলছে এবং বছরের প্রথম প্রান্তিকে আশানুরূপ মুনাফা অর্জিত হয়েছে।
হুয়াওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা অবস্থায় নিজেদের দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটাতে মানুষ এখন টেলিযোগাযোগ, অনলাইন শিক্ষা পদ্ধতি এবং ই-কমার্সের প্রতি বেশি ঝুঁকছে। এতে নেটওয়ার্কের চাহিদাও বেড়েছে। ক্রমবর্ধমান এই চাহিদা পূরণে ক্যারিয়ারগুলোর সাথে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছে হুয়াওয়ে। করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরুতেই হুয়াওয়ে এবং এর অংশীদারেরা দ্রুত ৫জি এবং এআই নির্ভর অনেক মেডিকেল অ্যাপ্লিকেশন চালু করেছে। এআই নির্ভর করোনা ডায়াগনোসিস সমাধানের মাধ্যমে সিটি স্ক্যান পর্যালোচনার সময় ১২ মিনিট থেকে ২ মিনিটে নেমে এসেছে, যা করোনা চিকিৎসায় ডাক্তারদেরকে দারুণ সাহায্য করছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ৫জি নির্ভর ‘ভিডিও পরামর্শ’ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের ঘাটতি পূরণের পাশাপাশি করোনা শনাক্তকরণ ও গুরুতর রোগির চিকিৎসা প্রদানের দক্ষতা বাড়িয়েছে। এআই নির্ভর থার্মাল ইমেজিং যন্ত্র সন্দেহভাজন রোগীর শরীরের তাপমাত্রা মাপতে পারছে, যা করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এ ছাড়া আক্রান্ত বিভিন্ন দেশ এবং প্রতিষ্ঠানকে প্রয়োজনমতো মাস্ক, টেস্ট কিটসহ অন্যান্য দরকারী জিনিসপত্র প্রদানে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে হুয়াওয়ে।
করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ফিলিপিন্স, সিঙ্গাপুর, ব্রুনাই, কম্বোডিয়া, লাওসসহ এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চল এবং আসিয়ানভূক্ত অনেক দেশের পাশে দাঁড়িয়েছে হুয়াওয়ে। অভিনব প্রযুক্তি সহায়তার মাধ্যমে যোগাযোগ ঝুঁকি চিহ্নিত করার পাশাপাশি নির্বিঘ্ন সংযোগসহ অন্যান্য দরকারী সেবা প্রদানে সর্বোচ্চ সহায়তা করছে প্রতিষ্ঠানটি।
করোনা চিকিৎসায় সম্প্রতি ব্যাংককের সিরিরাজ হাসপাতালে এআই নির্ভর সমাধান চালু করা হয়েছে, যেটি প্রদান করেছে থাইল্যান্ডের ডিজিটাল অর্থনীতি ও সমাজ মন্ত্রণালয় এবং হুয়াওয়ে।
৫জি নেটওয়ার্ক নির্ভর এআই প্রযুক্তি রোগ নির্ণয়ের সক্ষমতা ও কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করেছে। এতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ২০,০০০ সিটি স্ক্যানের ফলাফল বিশ্লেষণ করা যায়। এ ছাড়া বিদ্যমান ডেটাবেসের নমুনার সাথে তুলনা করে এটি সহজেই রোগ শনাক্ত করতে পারে।
হুয়াওয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, করোনা মহামারির প্রকোপ ঠিক কখন থামবে, তা নিশ্চিতভাবে বলা হয়তো অসম্ভব; কিন্তু হুয়াওয়ে বিশ্বাস করে যে, ঐক্যবদ্ধভাবে থাকলেই এই বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।